একটি দেশ, একটি জাতির অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি হলো শিক্ষা। ঠিক তেমনি একটি জাতির ভিত্তিমূল, উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং সামনে এগিয়ে যাওয়া নির্ভর করে তার শিক্ষার ওপর। এ কথা সত্যি, যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত, সে জাতি তত বেশি উন্নত, সভ্য ও অগ্রসর। তবে সে শিক্ষা হতে হবে প্রকৃত শিক্ষা, নৈতিক শিক্ষা, মূল্যবোধ তৈরি শিক্ষা, কর্মমুখী শিক্ষা এবং কল্যাণমুখী শিক্ষা। কেবল পাঠ্যবই মুখস্থ করে পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষা নয়। সুতরাং প্রকৃত শিক্ষাব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যথায় আমাদের সন্তানরা নৈতিক শিক্ষার অভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। প্রতিযোগিতার বিশ্বে কর্মমুখী এবং কল্যাণমুখী শিক্ষার অভাবে বিশ্বের মানচিত্র থেকে ঝরে পড়বে।
বিশ্বের অনেক দেশ বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ঋণাত্মক। সেখানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অর্থাৎ কর্মক্ষম জনসংখ্যার হার বাংলাদেশে এখনো অনেক দেশের চেয়ে অনেক বেশি। ২০৩০ সাল পর্যন্ত এ সুবিধা থাকবে। সুতরাং আমরা যদি শিক্ষাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেশের জনসংখ্যাকে মানবসম্পদে রূপান্তর করতে পারি তাহলে বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর মানচিত্রে অন্যতম একটি উন্নত দেশ। শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক পণ্য। সুতরাং পরিবর্তনশীল বিশ্বে সব ধরনের পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে বহির্বিশ্বের সাথে তুলনা করে শিক্ষায় পরিবর্তন আনার চেষ্টা করতে হবে যেন শিক্ষা মানবীয় গুণ এবং অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখে। কথিত আছে- বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার প্রতিবেশী দেশের মদদপুষ্ট হয়ে তাদের স্বার্থে দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে দেশের আইন, বিচার, নির্বাহী, মিডিয়া, স্বাস্থ্যসহ সব কিছুর সাথে শিক্ষাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে গেছে। কারণ তারা জানত, একটি জাতিকে যদি বিনা রক্তপাতে ধ্বংস করতে হয় তাহলে সে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করলে সে জাতি ধ্বংস হয়ে যাবে।
আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের ৫৩ বছরেও দেশে একটি স্থিতিশীল এবং গ্রহণযোগ্য শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করা সম্ভব হয়নি। শিক্ষা নিয়ে চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামকে মুছে দিয়ে বিজাতীয় শিক্ষা ঢুকানোর চেষ্টা হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে। পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশকে শিক্ষা, চিকিৎসা, কর্মসংস্থান ও পণ্য রফতানির বাজার বানিয়ে বিলিয়ন ডলার নিয়ে যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্ম শিক্ষার নামে বিদেশ পাড়ি দিয়ে আর ফিরে আসছে না। ফলে দেশে মেধাবীদের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে যা দেশের অর্থনীতির জন্য নেতিবাচক। অথচ আমাদের দেশে শিক্ষাকে ঢেলে সাজানোর মতো অভিজ্ঞতা, যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষাবিদ ও শিক্ষক রয়েছেন। চাই শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন, অর্থাৎ গতানুগতিক মুখস্থ বিদ্যা পরিহার করে কর্মমুখী এবং নৈতিকতাসম্পন্ন কল্যাণমুখী শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
কর্মমুখী শিক্ষা
শিক্ষা ছাড়া জীবন অপূর্ণ। তবে যে শিক্ষা বাস্তব জীবনে কাজে লাগে না, সে শিক্ষা অর্থহীন। এ ধরনের শিক্ষায় পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের বোঝা বাড়ে। তাই জীবনভিত্তিক কর্মমুখী শিক্ষা হলো প্রকৃত শিক্ষা যা আমাদের বাস্তব জীবনের সহায়ক। এ শিক্ষা মানুষকে আত্মপ্রতিষ্ঠায় সহায়তা করার লক্ষ্যে হাতে-কলমে প্রশিক্ষিত করে তোলে। ফলে যারা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষিবিদ ইত্যাদি স্বাধীন পেশা গ্রহণ করে তাদের চাকরির আশায় বসে থাকতে হয় না। অন্যদিকে, সাধারণ কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত হলে কারোর বেঁচে থাকার জন্য ভাবতে হয় না।
কর্মমুখী শিক্ষার অভাবে প্রতি বছর লাখ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেও মিলছে না চাকরি। মূলত রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক মন্দাসহ এবং মানসম্পন্ন শিক্ষাসহ বিভিন্ন কারণে এই বেকারত্ব। দেশের নিরেট বেকারত্বের হার ০৭ শতাংশ হলেও যোগ্যতা অনুসারে কাজ পাচ্ছেন না এমন বেকারের সংখ্যা অগণিত। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের এক গবেষণা দেখা যায়, দেশের ৪৭ শতাংশ স্নাতক বেকার। এ সমস্যার সমাধানে কর্মমুখী শিক্ষার ব্যবস্থা করে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।
নৈতিক শিক্ষা
অন্যায়, অবিচার, দুর্নীতি ও অসৎ কাজে লিপ্ত থাকাই ছিল প্রাচীন জমানায় আরবের মানুষের বৈশিষ্ট্য। সেই মানুষগুলো ইসলামের ছোঁয়া পেয়ে হয়ে গেলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ। রাসূল সা:-এর পূর্ব যুগে আরবের মানুষের যে নিত্যনৈমিত্তিক কাজ ছিল, তাঁর আগমনের পরে সে কাজগুলো হলো তাদের কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত। আজকের দিনেও কোনো জাতি যদি সেই শিক্ষায় শিক্ষিত হয় তাহলে কোনো মানুষের পক্ষে অসৎ কাজ করা সম্ভব নয়। বরং সেই শিক্ষাব্যবস্থায় মানুষ জীবনে যেমন চূড়ান্ত সাফল্য অর্জন করতে পারে তেমনি দুনিয়ার কাজকর্মের ভিত্তিতে পরকালেও সাফল্য অর্জন করতে পারবে। দুনিয়ার স্বল্পতম সময়ে অবস্থানে আল্লাহ যে জীবন ব্যবস্থা দিয়েছেন এবং রাসূল সা: যে জীবনব্যবস্থা অনুসরণ করেছেন সেই জীবনব্যবস্থায় চূড়ান্ত সাফল্য পাওয়া যাবে। তাই একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সম্ভব হলে দুর্নীতি বলতে কিছু থাকবে না; বরং থাকবে শুধু সুনীতি, সুশাসন ও জবাবদিহিমূলক যাবতীয় ব্যবস্থা। এর জন্য চাই উপযুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা।
কর্মমুখী ও নৈতিকতাপূর্ণ শিক্ষার প্রস্তাবনা
শিক্ষানীতি : শুরুতে দেশের ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা আমূল পালটে নতুন শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নে দেশীয় সত্তা ও মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিয়ে, কল্যাণমুখী রাষ্ট্র বিনির্মাণে, দক্ষ এবং ভালো মানুষ গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। শিক্ষার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা বিশেষভাবে বিবেচনায় নিয়ে, তাদের জন্য শিক্ষা বাজেটে অগ্রাধিকার নীতি চালু করতে হবে। উচ্চশিক্ষিত বেকার না বাড়িয়ে উচ্চশিক্ষার মান ধরে রাখতে শিক্ষার গুণগত মানের দিকে নজর দেয়া উচিত।
দেশের শ্রমবাজার এবং বিশ্বশ্রমবাজারে জনশক্তি রফতানির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডিপ্লোমা চালু করা উচিত, যাতে করে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা যায়। এ ছাড়া কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সম্প্রসারণ, গবেষণা কার্যক্রম এবং শিক্ষা মানোন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০ শতাংশ শিক্ষা এবং ৪০ শতাংশ গবেষণা-ভিত্তিক শিক্ষায় উন্নীত করা প্রয়োজন। প্রথম থেকে চতুর্থ আন্তর্জাতিক মুসলিম শিক্ষা সম্মেলনে গৃহীত (১৯৭৭-৮৩) মক্কা ডিক্লারেশনে বাংলাদেশ একটি স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে গৃহীত সুপারিশগুলো পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা দরকার। সেই মাফিক শিক্ষা সংস্কার কমিশন সেই ডিক্লারেশনে গৃহীত সুপারিশমালার বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেবে।
পাঠ্যক্রম : সব ধারার শিক্ষাব্যবস্থায় প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু সাধারণ বিষয় বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। বিশেষ করে বাংলাদেশ পরিচিতি, ইতিহাস ও সভ্যতা, সামাজিক বিজ্ঞান এবং ধর্ম শিক্ষার পাশাপাশি কম্পিউটার দক্ষতা অর্জনকেও বাধ্যতামূলক করতে হবে। জাতীয় শিক্ষাক্রমে অবশ্যই বাংলা, ইংরেজি ও আরবি- তিনটি ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। সব স্তরের পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচিতে জীবনমুখী দক্ষতা এবং বিষয়ভিত্তিক, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের যথাযথ সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে। জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় সব স্তরে ‘ফান্ডামেন্টালস অব রিলিজিয়ন’ বিষয় বাধ্যতামূলক করতে হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রতিটি বিষয়ের সাথে ‘প্রাসঙ্গিক ধর্মীয় কোর্স’ বাধ্যতামূলক করতে হবে। যেমন- অর্থনীতিতে ইসলামী অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ইসলামী রাষ্ট্রচিন্তা, আইনে ইসলামিক লিগ্যাল থিওরি ইত্যাদি। আমাদের দেশের শিল্প এবং অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর সাথে মিল রেখে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভাগ চালু ও শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়ন করা, যাতে করে আমাদের দেশকে ভিন্ন দেশ থেকে লোক নিয়োগ করতে না হয়।
উচ্চশিক্ষায় করপোরেট স্বার্থের ইন্টারেস্টের অপ্রয়োজনীয় পাঠ্যবিষয়গুলো বাদ দিয়ে সামাজিক ইন্টারেস্টের প্রয়োজনীয় নতুন বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। একই সাথে, শ্রমবাজারের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যেসব বিষয়ের বাস্তব প্রয়োগ নেই, সেগুলোকে ধীরে ধীরে অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সাথে একীভ‚ত করে বিলুপ্ত করতে হবে। কওমি মাদরাসায় ভালো আলেম গড়ার লক্ষ্য নিয়ে ও কওমি শিক্ষাব্যবস্থার স্বকীয়তা বজায় রেখে সিলেবাসকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। যেন এ শিক্ষায় শিক্ষিতরা সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় যোগ্য হিসেবে গড়ে উঠে। এর জন্য মাদরাসা শিক্ষায় ইসলামী বিষয়ের সাথে সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি এবং ভাষা ও তথ্যপ্রযুক্তি দক্ষতা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারিগরি শিক্ষা ব্যাপকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। উচ্চশিক্ষার সুযোগ এবং সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গবেষণার ক্ষেত্রও তৈরি করতে হবে।
প্রশিক্ষণ : সব স্তরের শিক্ষকদের জন্য পেডাগোজি ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা চালুর পাশাপাশি বিষয়ভিত্তিক শিক্ষণ এবং প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য জাতীয়ভাবে পৃথক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট চালু করে শিক্ষকদের প্রি-সার্ভিস এবং ইন-সার্ভিস প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এ ছাড়া ওই ইনস্টিটিউটের প্রশিক্ষকদের বাধ্যতামূলক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিদেশী ডিগ্রিধারী হতে হবে। প্রাথমিক স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষকদের সবার জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের মাধ্যমে শিক্ষকদের উপযুক্ত বেতন ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া মেধাবীরা শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, এ লক্ষ্যে এডুকেশন সার্ভিস কমিশন গঠন করা যেতে পারে যা হবে অন্যান্য কর্মক্ষেত্রের তুলনায় সামঞ্জস্যপূর্ণ ও বৈষম্যবিহীন। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতিতে বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান, ব্যবহারিক দক্ষতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও নৈতিক মূল্যবোধের প্রতিফলন নিশ্চিতকরণে এ সংক্রান্ত শিক্ষার বিষয়েও গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষক মূল্যায়নেও একই ব্যবস্থা থাকা বাঞ্ছনীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেভেলের শিক্ষকদের টিচিং ও গবেষণায় যথাক্রমে ৬০ এবং ৪০ শতাংশ হারে মূল্যায়ন ব্যবস্থা থাকা দরকার।
ব্যবস্থাপনা : সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের অবশ্যই স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার ব্যবস্থা এবং নেতৃত্বের বিষয়ে ডিগ্রি থাকতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ এবং ব্যবস্থাপনায় বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষানুরাগী শিক্ষক-শিক্ষাবিদ সদস্য, দাতা সদস্যের বাইরে উদ্যোক্তা-প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। এ ছাড়া ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে কমিটিতে আওতাভুক্ত করা উচিত। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অধিভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মান কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা যাতে যত্রতত্র কলেজ-মাদরাসা গড়ে উঠতে না পারে। জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় সঙ্কট মোকাবেলায় দ্রুত শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন, পরবর্তীতে শিক্ষা কমিশন গঠন অথবা জাতীয় করতে হবে। যেখানে শিক্ষানীতি, শিক্ষাক্রম, পাঠ্যক্রম ও শিক্ষাব্যবস্থাপনায় বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিত্ব, দেশের শিল্প ও শ্রমবাজারের সাথে পরিচিত ব্যক্তিত্ব এবং ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।
পরিশেষে বলতে হয়, দুর্নীতি, অপরাজনীতি ও অপসংস্কৃতিতে ছেয়ে গেছে বাংলাদেশ, যার অন্যতম কারণ শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি। এবার নির্দলীয়ভাবে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের ফসল অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। জাতি আশা করছে, এবার এদেশে একটি কর্মমুখী এবং নৈতিক মানসম্পন্ন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা পাবে, যা নিয়ে আর পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে না, কেবল পৃথিবীর পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিকায়ন হবে।
লেখক : অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট
Mizan12bd@yahoo.com
১৯/এ, নয়া পল্টন, ঢাকা, মোবাঃ ০১৮৮৬ ১১৭৭২৭
সর্বস্বত্ত সংরক্ষিত: www.peoplevoicebd.com